.
عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ قَالَ حَدَّثَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ لَيْلَةَ أُسْرِىَ بِهِ أَنَّهُ لَمْ يَمُرَّ عَلَى مَلإٍ مِنَ الْمَلاَئِكَةِ إِلاَّ أَمَرُوْهُ أَنْ مُرْ أُمَّتَكَ بِالْحِجَامَةِ-
এক কথায় হিজামার সায়েন্টিফিক সংজ্ঞা হল - ' Hijamah is a skin based excretory procedure '
এখন প্রশ্নটা হল - সেটা কীভাবে?
আমরা সবাই জানি আমাদের শরীরের ক্ষতিকর পদার্থগুলো বের করে দেয়ার দ্বায়িত্বে যারা যারা নিয়োজিত তাদের মধ্যে কিডনীর কাজটাই প্রধান এবং সবচেয়ে বেশি।
কিডনিকে ডাক্তাররা বলে থাকেন শরীরের ছাঁকনি। ছাঁকনি যেমন ছেঁকে ছেঁকে ভালো যা লাগবে তা রেখে দেয় এবং যা লাগবে না তা বের করে দেয়, কিডনি ঠিক সেই কাজটাই করে থাকে।
এইটুকু আমরা কম বেশি সবাই জানি। কিডনীর মত এই ছাঁকনির কাজটা আমাদের শরীরের অন্য কোন অর্গান কি করতে পারে? এই প্রশ্নটা নিয়ে conventional medicine অতটা না ভাবলেও হিজামার তাইয়িবাহ মেকানিজম কিন্তু আমাদের বাধ্য করছে নড়েচড়ে বসতে! হিজামার excretory benefit নিয়ে যত রিসার্চ হয়েছে তার সব কয়টি এ দাবি করে যে, হিজামার মাধ্যমে স্কিন এর ক্যাপিলারি দিয়েও wide range এ excretion সম্ভব যা স্বাভাবিক অবস্থায় স্কিন করেনা।
অর্থাৎ কিডনির মত আমাদের স্কিনও excretion(নিষ্কাশন) এর কাজটা করতে পারবে - যদি হিজামার মাধ্যমে স্কিন এর প্রাকৃতিক গঠনটাকে কিডনীর মত ছাঁকন বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন যায় তাহলে!
রিসার্চ এ উঠে এসছে যে, হিজামার মাধ্যমে কিডনির ছাঁকন কাজটার চেয়েও স্কিনের ছাঁকন কাজ অনেক বেশি শক্তিশালী করা সম্ভব!গঠনের দিক থেকে যদি আমরা মিলিয়ে দেখি তাহলে দেখব -
আমাদের স্কিনের নিচে যে বিস্তৃত রক্ত নালীর নেটওয়ার্ক (Dermal Capillaries) রয়েছে তা রীতিমত কল্পনাতীত। এই রক্তনালীগুলো আবার ছাঁকনির মত ছিদ্রিত। ঠিক কিডনির ছাঁকনির মত। কিন্তু, কিডনির ছাঁকনি যে কাজগুলো করতে পারে না, সেটাই এই ছাঁকনিগুলো দিয়ে করিয়ে নেয়া সম্ভব! হিজামার মাধ্যমে!!কিভাবে সেটা?
দেখুন, আপনার উপর যখন ডাক্তার হিজামা করছেন, তখন যে সাকশান প্রেশার ব্যবহার করছেন তা কিডনির স্বতঃস্ফূর্ত Filtration pressure এর চেয়েও ৩০-৪০ গুণ বেশি! অবিশ্বাস্য শোনালেও এটাই বাস্তবতা! অন্যদিকে কিডনির ছাঁকন যন্ত্র যাকে Glomerulous বলে, তা সাধারণত শুধু এমন সব জিনিস বের করে যা পানিতে দ্রবীভূত হতে পারে। আবার সেই জিনিসগুলোই বের করে যার সাইজ এই ছাঁকনির সাইজের চেয়ে ছোট। কিন্তু দেখা যাচ্ছে এমন অনেক জিনিস থাকছে যা বের করা দরকার কিন্তু, সাইজে বড় এবং এদের গঠনগত কিছু কারণে এসব ছাঁকনি দিয়ে বের হতে পারছে না। অথচ বের করা দরকার। (উদাহরণ হিসেবে বলা যায় কোলেস্টেরল এর কথা। সাইজেও বড়। আবার পানিতেও দ্রবণীয় নয়।
অবশেষে বলা যায়, হিজামার মাধ্যমে স্কিন কে দিয়ে কিডনির মত excretion এর কাজ করিয়ে নেয়া সম্ভব।
তাই হিজামার সময় রোগীর শরীরে বসানো প্রতিটি কাপকে কাজের সামঞ্জস্যের দিক থেকে এক প্রকার আর্টিফিশিয়াল কিডনি বললে খুব বেশি আসলে অত্যুক্তি করা হয়না!
হিজামা তে কোন পার্শপ্রতিক্রিয়া নাই।
হিজামা সকল বয়সী লোকদের জন্য প্রযোজ্য। বিশেষ করে-
(১) যারা স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন।
(২) যাদের জয়েন্টগুলোতে ব্যাথা, ঘাড়, হাটু এবং কোমর ব্যথা আছে।
(৩) বৃদ্ধ বাবা-মা; যাদের বাতের ব্যথা আছে ।
(৪) যাদের প্রেসার এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে
(৫) যাদের শারীরিক যন্ত্রনায় ঘুম কম হয়।
(৬) দূর্বল লোকদের জন্য; যারা অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে যান।
(৭) যারা প্রতিদিন রাস্তায় চলাফেরা করেন এবং যারা ধুলাবালিতে কঠোর পরিশ্রম করেন।
(৮) ধূমপায়ীদের জন্য; যারা সিগারেট এর নিকোটিন শরীর থেকে বের করতে চান।
(৯) যারা শরীরের ভিতরের বিষাক্ত টক্সিন দূর করতে চান।
(১০) যারা শরীরে বিষাক্ত টক্সিন আছে কিনা যাচাই করতে চান।
★“নিশ্চয় হিজামায় শেফা রয়েছে।”
[ মুসলিম: ২২০৫]
★"হযরত জিব্রাঈল আমাকে জানিয়েছেন যে, মানুষ চিকিৎসার জন্য যতসব উপায় অবলম্বন করে, তম্মধ্যে হিজামাই হল সর্বোত্তম।”
[ আল-হাকিম, ৭৪৭০]
★ “আমি মেরাজের রাতে যাদের মাঝখান দিয়ে গিয়েছি, তাদের সবাই আমাকে বলেছে, হে মুহাম্মদ, আপনি আপনার উম্মতকে হিজামার আদেশ করবেন।”
[ সুনানে তিরমিযী: ২০৫৩]
★“খালি পেটে হিজামাই সর্বোত্তম। এতে শেফা ও বরকত রয়েছে এবং এর মাধ্যমে জ্ঞান ও স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়।”
[সুনানে ইবনে মাজাহ, : ৩৪৮৭]
★ "রোগমুক্তি তিনটি জিনিসের মধ্যে নিহিত; হিজামা লাগানো, মধু পান করা এবং আগুন দিয়ে গরম দাগ দেয়ার মধ্যে। তবে আমি আমার উম্মাতকে আগুন দিয়ে গরম দাগ দিতে নিষেধ করি"।
[বুখারী; ৫৬৮১]
★ "হিজামা গ্রহণকারী কতোই উত্তম লোক! সে দূষিত রক্ত বের করে মেরুদন্ড শক্ত করে ও দৃষ্টিশক্তি প্রখর করে!"
[সুনানে তিরমিযী; ২০৫৩]
হযরত আবদুল্লাহ্ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “হিজামাকারী কতইনা উত্তম লোক। সে দূষিত রক্ত বের করে মেরুদন্ড শক্ত করে ও দৃষ্টিশক্তি প্রখর করে।”