হিজামা কি ?
সুন্নাহ পয়েন্টে হিজামা কী এবং কেন ?
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হিজামা করার হাদিস গুলো যদি আমরা পর্যালোচনা করতে যাই তাহলে দেখা যাবে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হিজামা পয়েন্টগুলো ছিল: • ১. ঘাড়ের ৭ নাম্বার হাড়ের স্পাইনের উপর (কাহিল এরিয়া) • ২. ঘাড়ের দুই পাশে, কানের ঠিক পেছনের জায়গাটায়। (আখদায়িন এরিয়া) • ৩. দুইটা স্ক্যাপুলার বা, সোল্ডার ব্লেডের মাঝের জায়গা • ৪. মাথায় সবচেয়ে উঁচু জায়গাটায় (ভার্টেক্স)
কিভাবে ব্যথা কমে
হিজামা সবচেয়ে বেশি উপকারী যেকোন ধরনের ব্যথা উপশমে। হোক সে ব্যথা নতুন বা পুরানো! কিংবা হোক তা শরীরের যেকোন জায়গায়!! হিজামা শেষে ব্যথা কমতেই সবার কমন প্রশ্ন - "কিভাবে ব্যথা কমলো !!!" আসুন জানি ব্যাপারটা কী ..... * কোন একটি প্রদাহজনিত প্যাথলজিক প্রসেস যখন আমাদের শরীরে শুরু হয় তখন আক্রান্ত স্থানে অনেক গুলো পরিবর্তন হয়।
চাঁদের সাথে হিজামা (কাপিং) এর সম্পর্ক !
হযরত আবু হুরাইরা (রা) আনহু রা থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "যে কেউ ১৭, ১৯ বা ২১ দিনের (ইসলামী, চন্দ্র মাস) হিজামা (কাপিং) সঞ্চালন করে তারপর এটি প্রত্যেক রোগের জন্য একটি প্রতিকার।"
[সহীহ সুন্নাহ আবু দাউদ]
অর্থাৎ যদি কেউ চাঁদের তারিখে হিজামা করায় তা সব রোগের প্রতিষেধক। এখন আসুন দেখি সায়েন্স কি বলে।
বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় চাঁদ এবং হিজামার মধ্যে সম্পর্ক:
চাঁদ পৃথিবীতে জীবের জীবনী রহসের আশ্চর্য পাথেয়। চাঁদ মানুষ, পশুজগত ইত্যাদির প্রজনন সহ জীবন ধারণে ভূমিকা রাখে। চাঁদ বিভিন্ন গ্রহাণু থেকে আসা হাজার হাজার জুল তাপ গ্রহণ করে যা আমাদের গ্রহকে আঘাত থেকে বাঁচায়।
ইসলামী বিজ্ঞানে চাঁদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ, সুস্থতায় চাঁদের ভূমিকার কথা বারবার বলা হয়েছে।
হিজামার জন্য সর্বোত্তম দিনগুলি চাঁদের ১৭ তারিখ থেকে ২১ দিনের পর পাঁচ দিন পূর্ণ চাঁদের পরিপূর্ণ দশায় শরীরের রক্তের হিউমাস / জীবাণু পানি চাঁদের প্রভাবে চলে আসে হিজামা করার স্তরে। ঠিক যেমন এই সময় টাতে জোয়ার ভাটা হয় তেমনি তা সকল প্রাণিকে আকর্ষণ করে। প্রমাণস্বরুপ এ সময় টাতে মানুষ এর শরীর উদ্দীপিত হয়, চুরি ডাকাতি, অন্যায় কাজ বেড়ে যায়।
এভাবে যখন আরবি চন্দ্র মাস শেষ করে (১৭ ~ ২৭), রক্ত , রক্তের অবশিষ্টাংশ এবং হিউমেরাস (পুরাতন এবং মৃত রক্ত কোষ) কাঁধের ব্লেড এলাকায় (সার্কভিক্যাল ) এবং শরীরের অন্যান্য অংশে চামড়ার সর্ব উপরের স্তরে আসতে পারে।
হিজামা/কাপিং রক্ত থেকে বর্জ্য অপসারণ, ভারসাম্য পুনরুদ্ধার, এবং শরীরের ক্ষতিকারক বর্জ্য নিষ্কাশিত করা সম্ভব হয়।
এটি উল্লেখ্য যে তারিখটি নির্বিশেষে, রোগীদের উপর জরুরি অবস্থায় পালন করার জন্য নয়, প্রয়োজনে রোগী তার রোগের জন্য যে কোন সময়েই এ চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারে।
আনাস বিন মালেক রা. থেকে বর্ণিত রাসুল (স:) বলেন, “আবহাওয়া যখন খুব গরম হয়, তখন হিজামা (কাপিং)থেরাপির সাহায্য নাও, আক্রোশ বা রাগান্বিত অবস্থায় তোমরা রক্ত প্রবাহিত হতে
দিও না, ইহা যেন হত্যার শামিল।” [হাকিম বর্ণিত মুসতাদারক এবং ইমাম আয যাহাবী একমত
(৪/২১২)]
মাথার মধ্যভাগ কে আরবিতে বলা হয় ইয়াফুখ। (Yafukh)
এই পয়েন্ট টি সাধারণত সব মানসিক, মানসিক ব্যাধির চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়, তবে মাথাব্যাথা, মৃগী, নিউরোলজিকাল এবং এনড’করিনের মত রোগের জন্যও কার্যকরী।
আব্দুল্লাহ বিন রাদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু বলেছেন যে, নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম তার মাথায় (ইয়াফূখে) হিজামাহ গ্রহণ করেন এবং তিনি মক্কা যাওয়ার পথে ইহরাম অবস্থায় ছিলেন। [ইবনে-ই-মাজা]
ঘাড় বরাবর মাথার ঠিক পিছনের পয়েন্টি হল কামাদুয়া (Qamahduah)।
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম নিজে এই পয়েন্টে করেছেন এবং তিনি বলেছেন, "তোমরা এই জায়গাটা তে হিজামা করাও কারণ এটি ৭২ ধরনের রোগের চিকিৎসা করে" - [তিবরানী]
এই পয়েন্টে কাপিং থেরাপিতে ৭২ টি রোগ রয়েছে যার মধ্যে রয়েছে ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, ব্যাকপেইন এবং পেট ব্যথা। এটি অগ্ন্যাশয়ের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং হজম প্রণালীর সামগ্রিক দক্ষতা বাড়ায়।
আবু দাউদ থেকে বর্ণিত যে জাবির রাদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু বলেছেন, নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম তার পেছনে হিজামাহ ব্যবহার করেছেন দুর্বলতার কারণে।
পায়ের পাতার উপরের পয়েন্ট:
এই অংশটি প্রচলিতভাবে ফুলে যাওয়ার জন্য, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, পেটে ব্যথা, ফুসকুড়ি এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য ব্যবহৃত হয়। অমনোযোগীতা, অস্থিরতা, হাঁপানি, ADD/ADHD, এবং মৃগীরোগের চিকিৎসায় এটি ব্যবহার করা যেতে পারে।
হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত যে, ইহরাম অবস্থায় নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এ অংশে হিজামা নিয়েছিলেন। - [আবু দাউদ]
Science Behind Hijama
**নাইট্রিক অক্সাইড থিওরি**♦
নাইট্রিক অক্সাইড কী?
নাইট্রিক অক্সাইড একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ যৌগ যা শরীরে রাসায়নিক বার্তাবাহক হিসেবে কাজ করে। এটা আমাদের বেঁচে থাকার জন্য খুব দরকারি। আমাদের রক্তনালিগুলোর ভেতরের লেয়ারে নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি হয়। এছাড়াও মস্তিষ্কে ও শ্বেত রক্তকনিকাতেও এটা তৈরি হয়। এটার কাজের ওপর ভিত্তি করে বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন 'miracle molecule'।
নাইট্রিক অক্সাইড এর এত এত শারিরবৃত্তীয় ফাংশান থাকার পরও এটা আবিষ্কার হয়েছে এই ১৯৯৮ সালে। আর এই রিসার্চের কারনেই তিনজন আমেরিকান ফিজিশিয়ান পেয়েছিলেন নোবেল পুরস্কার।
* এটি একটি শক্তিশালী জিনেটিক রেগুলেটর!
আমাদের শরীরে যে ৫০ ট্রিলিয়ল কোষ আছে এই কোষগুলোর একটির সাথে আরেকটির যোগাযোগ করার মাধ্যম হচ্ছে এই নাইট্রিক অক্সাইড গ্যাস।
*♦স্বাভাবিক অবস্থায় শরীরে নাইট্রিক অক্সাইডের কাজ কী?
আমাদের শরীর যখন পরিমিত মাত্রায় নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি করে তখন আমাদের ব্লাড প্রেশার কম থাকে, পুরুষাঙ্গের ভাল ইরেকশান হয়, হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুকি কম থাকে, গ্লুকোজ লেভেল নিয়ন্ত্রনে থাকে।
•ব্রেন ও শরীরের স্নায়ুকোষ গুলোর মাঝে ট্রান্সমিটার এর কাজ করার মাধ্যমে এটা স্মৃতিশক্তি ও আচরণ এ সাহায্য করে।
•এটা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
•ক্যান্সার সেল এর এ্যাপোপটোসিস (কোষের স্বাভাবিক ফিজিওলজিক্যাল মৃত্যু) ও সুস্থ কোষের বৃদ্ধি নিশ্চিত করে।
•রক্তনালীর সংকোচন ও প্রসারণের মাধ্যমে ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ করে।
•ইনফ্ল্যামেশান কমায়।
•ঘুমের গভীরতা নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে ঘুমের কোয়ালিটি নিশ্চিত করে
•ঘ্রাণশক্তি রেগুলেট করে
•কষ্ট/ ব্যাথার সহ্যক্ষমতা ও শারীরিক সক্ষমতা বাড়ায়
•পাকস্থলীর মোটিলিটি নিয়ন্ত্রণ করে।
নাইট্রিক অক্সাইড লেভেল কমে গেলে ঠিক এর বিপরীত অবস্থা হয়।
♦* নাইট্রিক অক্সাইড কমে গেলে কী ফলাফল হতে পারে?
১। এন্ডোথেলিয়াল ডিসফাংশান ও হাইপারটেনশান (HTN, হাই ব্লাড প্রেশার)-
হাই প্রেশারের রোগীরা যে নাইট্রোগ্লিসারিন ট্যাবলেট বা স্প্রে ইউজ করে তা নাইট্রিক অক্সাইডে কনভার্ট হয়, তারপর হাইপ্রেশার নিয়ন্ত্রন করে।
২। কার্ডিও ভাস্কুলার ডিজিজ, হার্ট ব্লক, এ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস
৩। যৌন সমস্যা (ইরেক্টাইল ডিসফাংশান, লিবিডো বা যৌনাকাংক্ষা কমে যাওয়া):
পুরুষাঙ্গের ইরেকশান নাইট্রিক অক্সাইডের ওপর নির্ভর করে।
৪। ইনসোমনিয়া বা বা ঘুম না আসা
৫। ফ্যাটিগ বা অল্প কাজেই দূর্বল লাগা
৬। এ্যাংজাইটি, টেনশান
৭। ডিপ্রেশান
৮। ডায়াবেটিস
* নাইট্রিক অক্সাইড কমে যাওয়ার কারন কী?
•ধুমপান:
মজার ব্যাপার হচ্ছে সিগারেট স্মোকে নাইট্রিক অক্সাইড থাকে যা সরাসরি রক্তে মিশে গিয়ে ব্লাড ভেসেলকে রিল্যাক্স করার কথা। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে স্মোক এর মধ্যকার কিছু মলিকিউল অক্সিডেন্ট ইনডিউসড এন্ডোথেলিয়াল ট্রমা করে রিল্যাক্সেশান করে। আর স্মোকের মধ্যকার নাইট্রিক অক্সাইডকে ডিগ্রেডেশান করে দেয়। তাই স্মোকিং রক্তনালীকে পার্মানেন্টলি ড্যামেজ করে ও ফ্যাট ডিপোজিশান করে। তাই সিগারেট খেলে একটা টেমপোরারি রিল্যাক্সেশান হয় ঠিকই, কিন্তু এটাই পরবর্তীতে হাইপারটেনশান করে।
[রিসার্চ দেখুন:
Cigarette smoke containing superoxide (O2−·), nitric oxide (·NO), and peroxynitrite (ONOO−) induces oxidant stress and impairs endothelium-dependent vasodilation through ·NO degradation to peroxynitrite and causes activation of platelets and macrophages and lipid peroxidation. Vitamin C protects the vessel from oxidant-induced impairment of endothelium-dependent relaxations by scavenging superoxide, which in turn prevents ·NO degradation, lipid peroxidation, and platelet and neutrophil activation. Results of O2−·-induced lipid peroxidation: LO·, lipid alkoxyl radical; LOO·, lipid peroxyl radical; and eNOS, endothelial NO synthase]
ঠিক একই কারণে স্মোকিং/ ধুমপান নাইট্রিক অক্সাইড ডিগ্রেডেশান করে ইরেক্টাইল ডিসফাংশান করে যৌন ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
•মাউথওয়াশ ব্যবহার:
মাউথওয়াশ মুখের ভাল ব্যাকটেরিয়াকেও মেরে ফেলে, তাই ন্যাচারালি নাইট্রিক অক্সাইড প্রডাকশান কমে যায়।
•বয়স
বয়স বাড়ার সাথে সাথে নাইট্রিক অক্সাইড প্রডাকশান কমতে থাকে।
•স্থূলতা
মোটা হয়ে গেলে , কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে অর্থাৎ শিরার ভেতরের (এন্ডোথেলিয়ামে) লেয়ারে ফ্যাট ডিপোজিশান হলে কমে যায়।
•কায়িক শ্রম
ব্যায়াম বা কায়িক শ্রম কম করলে নাইট্রিক অক্সাইড প্রডাকশান কমে যায়।
* শরীরে নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি করার কী কী উপায় আছে?
আমাদের শরীরে নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি করার তিনটি উপায় আছেঃ-
•নাইট্রেট- নাইট্রাইট- নাইট্রিক অক্সাইড pathway:
যখন আমরা নাইট্রেট সমৃদ্ধ খাবার খাই তখন এই নাইট্রেট পরিবর্তিত হয়ে নাইট্রাইট ও পরে নাইট্রিক অক্সাইডে রূপান্তরিত হয়। আমরা যখন খাবার খাই, তখন চর্বন ও জিভের নাড়াচাড়ার কারনে, এরপর পাকস্থলিতে ও অন্ত্রে খাবারের সাথে লালা ও জিভের উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার মিশ্রন ঘটে। এই ব্যাক্টেরিয়াই
সাইট্রুলিন – আরজিনিন – নাইট্রিক অক্সাইড – সাইট্রুলিন পাথওয়ে।
•আমরা যখন সাইট্রুলিন সমৃদ্ধ খাবার খাই তখন এটা আরজিনিন এ কনভার্ট হয় যা নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি এর পূর্বাবস্থা। আরজিনিন থেকেই পরে নাইট্রিক অক্সাইড সিনথেসিস হয়।
•হিজামা বা ওয়েট কাপিং থেরাপী:
হিজামা করার সময় যে ছোট ছোট স্ক্র্যাচ করা হয় এগুলো স্কিনের ঠিক নীচের বেইসমেন্ট মেম্ব্রেন এর ক্যাপিলারি গুলো পাংচার করে। এটা এতই সুক্ষ যে ব্যাথাই লাগে না। একটু সুড়সুড়ির মত অনুভুতি হয়। এই ক্যাপিলারি বা ছোট ছোট blood vessel গুলো পাংচারের ফলে এর এন্ডোথেলিয়াম থেকে নিঃসৃত হয় নাইট্রিক অক্সাইড। এই নাইট্রিক অক্সাইডই মূলত রোগ নিরাময়ের নিয়ামক হিসেবে কাজ করে।
• হিজামাতে কিভাবে নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি হয়?
হিজামাকে স্কিন সারফেসের ওপর ছোট ছোট স্কিন ডীপ স্ক্র্যাচ করা হয়। এই স্ক্র্যাচ গুল এতই সুক্ষ যে এটা শুধু স্কিন ও স্কিনের বেইজমেন্ট মেমব্রেনের মধ্যকার ক্যাপিলারি গুলোকে ইনজুরি করে। এর ফলে ইনফ্ল্যামেশান শুরু হয়। আর এই ইনফ্ল্যামেটরি মেডিয়েটরস এর মধ্যে একটা হচ্ছে নাইট্রিক অক্সাইড।
টক্সিন (Toxin)
সুন্নাহ পয়েন্টে হিজামা
সুন্নাহ পয়েন্টে হিজামা কী এবং কেন?
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হিজামা করার হাদিস গুলো যদি আমরা পর্যালোচনা করতে যাই তাহলে দেখা যাবে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হিজামা পয়েন্টগুলো ছিল:
• ১. ঘাড়ের ৭ নাম্বার হাড়ের স্পাইনের উপর (কাহিল এরিয়া)
• ২. ঘাড়ের দুই পাশে, কানের ঠিক পেছনের জায়গাটায়। (আখদায়িন এরিয়া)
• ৩. দুইটা স্ক্যাপুলার বা, সোল্ডার ব্লেডের মাঝের জায়গা
• ৪. মাথায় সবচেয়ে উঁচু জায়গাটায় (ভার্টেক্স)
• ৫. মাথার পেছনের দিকে ঘাড় এবং ভার্টেক্সের মাঝের জায়গা থেকে একটু উপরে (ইয়াফুখ এরিয়া)
• ৬. দুই ঊরুতে
• ৭. দুই পায়ের উপরের পাতায়।
মানবদেহের এই এরিয়াগুলোর গুরুত্ব নিয়ে যদি আমরা আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের আলোকে দেখতে যাই তাহলে দেখতে পাবো এই সুন্নাহ পয়েন্টগুলোর মাধ্যমে একাধিক রোগের চিকিৎসা কাভার করা যায়। এবং সত্যি কথা হচ্ছে হিজামা এমন একটা treatment procedure যেখানে আমরা আসলেই একের অধিক রোগের চিকিৎসা করে থাকি।
আমরা যখন হিজামা করে রক্ত এবং রক্তের সাথে রোগসৃষ্টিকারী পদার্থগুলো বের করে আনি, তখন কিন্তু শুধু নির্দিষ্ট কোন একধরণের রোগ সৃষ্টিকারী পদার্থ বের হয় না। বরং, হিজামা পয়েন্টে থাকা যাবতীয় রোগ সৃষ্টিকারী পদার্থ বেরিয়ে আসে। অর্থাৎ, আপনি যদি কোন একটা নির্দিষ্ট রোগের জন্য হিজামা করেন, তাহলে হিজামা সেই রোগের জন্য তো উপকার দেবেই, সাথে সাথে সেই পয়েন্টে যদি অন্য কোন রোগ সৃষ্টিকারী পদার্থ জমতে থাকে সেটাও বের করে দেবে। যদিও রোগ অনুযায়ী নির্দিষ্ট কিছু পয়েন্ট রয়েছে, তবে মোটা দাগে বিষয়টা এমনই।
যেমন ধরুন এজমার জন্য নির্দিষ্ট হিজামা পয়েন্ট রয়েছে। যিনি এজমা রোগের জন্য হিজামা করছেন তিনি বাকি যেসব রোগের জন্য এইসব পয়েন্টগুলো কমন সেগুলোর জন্যেও উপকার পাচ্ছেন। হিজামাতে এটাই non specific রোগ সৃষ্টিকারী পদার্থ বের করে দেয়ার সুবিধা। এছাড়া সুন্নাহ কাপিং এ একটা বেসিক ডিটক্সিফিকেশান হয়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
** হিজামা (CUPPING) করাতে যোগাযোগ করুন **
Hotline : 01711 532 483
Mobile : 01975 532 483
Chamber :
Baitul Hijama - বাইতুল হিজামা
Section-12, Avenue-4, Road-11, House-737
Mirpur-DOHS, Dhaka, Bangladesh.
facebook.com/baitul.hijama.bd
www.baitulhijama.com
(মহিলাদের জন্য মহিলা থেরাপিষ্ট রয়েছে)
কোলেস্টেরলের সমস্যার হিজামা
"হিজামা করালে কি কোলেস্টেরলের সমস্যার কোন উপকার হয়?"
রক্তে কোলেস্টেরল বেশি থাকা একটা বড় ধরণের স্বাস্থ্য ঝুকি। এই কোলেস্টেরল গুলোই একসময় রক্ত নালীতে জমা হয়ে হয়ে স্ট্রোকস বা হার্ট এ্যটাকের মত বড়সড় ঘটনা ঘটে যায়।
আমাদের পরিবার, পরিচিত সার্কেলে কোলেস্টেরল নিয়ে সমস্যায় থাকেন এমন কাউকে খুঁজে পেতে খুব একটা বেগ পেতে হয় না। সমস্যাটা এতটাই কমন। কোলেস্টেরলের সমস্যার জন্য তারা নিয়মিত ঔষধ খেয়ে যাচ্ছেন, খাবার নিয়ন্ত্রন করছেন। এর মাধ্যমেই এর নিয়ন্ত্রন নেবার চেষ্টা করছেন। কমিয়ে সহনীয় পর্যায়ে রাখছেন।
কিন্তু জানেন কি, হিজামার মাধ্যমেও আপনি কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারবেন?
কোলেস্টেরলের সমস্যা বলতে আমরা বুঝি রক্তে লিপিডের পরিমাণ বেশি। এর প্রধানত ৪ টা প্যারামিটার আছে। Total cholesterol, Triglyceride(TG), LDL-Cholesterol এবং HDL-Cholesterol. এর মধ্যে প্রথম ৩টা কম থাকা ভালো এবং শেষেরটা বেশি থাকা ভালো।
রিসার্চে দেখা গিয়েছে হিজামার প্রথম ২ সপ্তাহের মধ্যেই প্রথম তিনটা প্যারা মিটার উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমে এসেছে এবং গুড কোলেস্টেরল বা HDL-Cholesterol এর মাত্রা বেড়েছে।
যদি কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রন করতে চান হিজামাকে অবশ্যই অপশন হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন।
Diabetes (ডায়াবেটিস)
হিজামার মাধ্যমে চিকিৎসা নিয়ে ডায়াবেটিসকে অতি সহজে এবং সবচেয়ে কার্যকর উপায়ে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন । ডায়াবেটিসকে সহজে এবং সবচেয়ে কার্যকরভাবে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করার সর্বাধুনিক ট্রিটমেন্ট হচ্ছে হিজামা । হিজামার মাধ্যমে আপনি খুব অল্প সময়ের মধ্যে এবং খুব সহজেই এই মরণব্যাধির মারাত্মক পরিনতি থেকে মুক্তি পেতে পারেন । ডায়াবেটিস আপনার যে প্রধান তিনটি ক্ষতি করে তা হল- ১. আপনার শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন আশংকাজনক হারে কমিয়ে ফেলে । ২. শরীরের রোগ প্রতিরোধক ব্যাবস্থাকে অকেজো করে দেয় । ৩. এবং রোগ প্রতিরোধক ব্যাবস্থা ভেঙে পড়ার কারনে আপনার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রতঙ্গ ইফেক্টেড এবং অকেজো হয়ে আপনার হার্ট, কিডনি, লাঞ্জ একে একে সব ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে । হিজামা এমন এক চিকিৎসা, যার কোন প্রকার সাইড ইফেক্ট নেই, এর জন্যে কোন মেডিসিন নিতে হয়না এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ২য় সেশন বা ২য় বার হিজামা নেয়ার পর থেকেই আপনার ডায়াবেটিস কমে আসতে শুরু করে । এবং পর পর ৫ থেকে ৭টি সেশন নিলে ডায়াবেটিস পুরোপুরি নির্মূল হয় । প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থায় ডায়াবেটিস ভাল হবার কোন নজির নেই । প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থায় ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ মোটামুটি নিয়ন্ত্রণ করা যায় কিন্তু পুরোপুরি নিয়ন্ত্রন বা ইনসুলিন নেয়া থেকে বিরত থাকা সম্ভব না । আর এ জন্যেই আমাদের প্রায় সবারই এই বিশ্বাস মনের মাঝে গেথে গিয়েছে যে একবার ডায়াবেটিস হলে সারাজীবন এই রোগ বয়ে বেড়াতে হবে, এর থেকে মুক্তি নেই বরং দিন দিন ডায়াবেটিসের কারনে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে সহজেই আমরা নানান জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হব । এবং সত্যি বলতে তাই হচ্ছে। আর এ কারনেই প্রচলিত এই বিশ্বাসকে ভেঙ্গে নতুন বিশ্বাসের সূচনা করা বেশ মুশকিল ।
#চলুন জেনে নেই ডায়াবেটিস সম্পর্কে বিস্তারিত ♥️ আমাদের প্রধান খাদ্য উপাদান হলো শর্করা । এই শর্করা ভেঙে হয় গ্লুকোজ। আবার আমিষ বা চর্বিজাতীয় খাবার ভেঙেও বিশেষ অবস্থায় গ্লুকোজে পরিণত হয় । গ্লুকোজ শরীরের প্রধান জ্বালানি । এসব গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে যে হরমোন তার নাম ইনসুলিন । ইনসুলিন আসে অগ্ন্যাশয় (প্যানক্রিয়াস) থেকে । এটি রক্ত থেকে গ্লুকোজকে কোষে সরিয়ে নেয় । কিন্তু যদি কোনো কারণে অগ্ন্যাশয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে ইনসুলিন তৈরি না হয় অথবা শরীরের কোষগুলো ইনসুলিনের প্রতি যথেষ্ট সাড়া না দেয় তাহলে রক্তে গ্লুকোজের এই মাত্রা বাড়তে থাকে । এ অবস্থাকেই আমরা বলি ডায়াবেটিস, যাকে বাংলায় বলে বহুমূত্র রোগ । বিশ্বে ৪১৫ মিলিয়ন লোক ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগে আক্রান্ত । ২০৪০ সালে ৬৪০ মিলিয়নে ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে । ডায়াবেটিসের সমপরিমাণ লোক প্রাক-ডায়াবেটিসে ভুগছে। বাংলাদেশের মতো স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে এর প্রবণতা বেশি । *** ডায়াবেটিসের লক্ষণ *** বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শুরুতে রোগীরা বুঝতেই পারে না যে তাদের ডায়াবেটিস হয়েছে । কারো কারো ক্ষেত্রে ঘন ঘন পিপাসা লাগা, দুর্বল লাগা, ঠোঁট ও মুখ শুকিয়ে যাওয়া, ঘন ঘন ক্ষুধা লাগা, শরীর শুকিয়ে যাওয়া—এসব লক্ষণ দেখা যায় । কেউ কেউ ডাক্তারের কাছে আসেন পায়ে, নখে, চামড়ায় বা যৌনাঙ্গে বিভিন্ন রকম ইনফেকশন নিয়ে । ডায়াবেটিস হলে মেজাজ বিগড়ে যেতে পারে, মুড ওঠানামা করে । হাত-পা জ্বালাপোড়া করাও ডায়াবেটিসের লক্ষণ । তবে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত অথচ উপসর্গহীনতা বা অসচেতনতার কারণে ৫০ শতাংশ রোগীই জানেন না যে তাদের ডায়াবেটিস আছে । বিশেষ করে টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের এ সমস্যা বেশি। ** কারণ- প্রধানত দুটি কারণে এ রকম অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে ।
টাইপ-১ : শরীরে অগন্যাশয় গ্রন্থিতে ইনসুলিন হরমোন নিঃসরণকারী বিটা সেলের পরিমাণ ব্যাপক হারে হ্রাস পাওয়া এবং বিটা সেল থেকে নিঃসৃত ইনসুলিন যদি কোষের ওপর সঠিকভাবে কাজ করতে না পারে । এ ক্ষেত্রে অগ্ন্যাশয় গ্রন্থিতে বিটা সেলের পরিমাণ শূন্যের কোঠায় পৌঁছলে তখন ইনসুলিন বাইরে থেকে নেওয়া (ইনজেকশনের মাধ্যমে) ছাড়া কোনো উপায় থাকে না । এ ধরনের ডায়াবেটিসকে টাইপ-১ বা ইনসুলিননির্ভর ডায়াবেটিস বলে । টাইপ-২ : শরীর যখন ইনসুলিন তৈরি করতে পারে, অর্থাৎ সামান্য পরিমাণ বিটা সেল উপস্থিত থাকে, কিন্তু শর্করার বিপাকের জন্য তা পর্যাপ্ত নয়, এ ধরনের ডায়াবেটিসকে টাইপ-২ ডায়াবেটিস বলে ।
টাইপ-২ ডায়াবেটিসের সঙ্গে স্থূলতার একটি ভালো সম্পর্ক রয়েছে । শিশুদেরও এ রোগ হতে পারে । তবে চল্লিশোর্ধদের মধ্যে এই রোগের প্রবণতা বেশি (৯০ শতাংশ) । আরেক ধরনের ডায়াবেটিস রয়েছে, যাকে বলে গেস্টেশনাল ডায়াবেটিস বা গর্ভকালীন ডায়াবেটিস । যখন কোনো মায়ের গর্ভাবস্থায় প্রথমবারের মতো ডায়াবেটিস ধরা পড়ে তখন তাকে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বলে । এ ক্ষেত্রে ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ রোগী পরবর্তী সময় স্থায়ীভাবে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয় । বাংলাদেশে এর প্রবণতা অনেক বেশি। ** প্রচলিত ধারনা হচ্ছে ডায়াবেটিস একবার হলে আজীবন এই রোগ বয়ে বেড়াতে হবে। এর কোন প্রতিকার নেই, কেবল নিয়ন্ত্রণ সম্ভব । তাই যিনি একবার এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি জীবন ভর এই রোগ বয়ে বেড়াচ্ছেন । জীবন যাপনে নিয়ে এসেছেন নানান পজেটিভ পরিবর্তন যা তাকে অন্য রোগ হওয়ার হাত থেকে বাচাঁবে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখবে । ** আপনি জেনে আনন্দিত হবেন, হিজামার মাধ্যমে এই রোগ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব ।পুরোপুরি নিয়ন্ত্রন মানে হচ্ছে আপনার ইনসুলিন নেয়া লাগবেনা কোন মেডিসিন নেয়া লাগবেনা আপনার বরের কোন পার্টস যেমন হার্ড কিডনি এগুলো ইফেক্ট এড হবে না এবং আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থা পুনর্বিন্যাস হবে এবং সঠিকভাবে কাজ করবে । হিজামার মধ্যমে ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি চাইলে এবং আজীবন মুক্ত থাকতে চাইলে আপনাকে কিছুটা ধৈর্যের পরিচয় দিতে হবে । সেক্ষেত্রে ৫ থেকে ৭ টি সেশন হিজামা নিতে হবে ।
Anatomy of Hijama Therapy
কিছু ধারনা দেয়া :
হিজামার সায়েন্টিফিক সংজ্ঞা
এক কথায় হিজামার সায়েন্টিফিক সংজ্ঞা হল - ' Hijamah is a skin based excretory procedure ' এখন প্রশ্নটা হল - সেটা কীভাবে? আমরা সবাই জানি আমাদের শরীরের ক্ষতিকর পদার্থগুলো বের করে দেয়ার দ্বায়িত্বে যারা যারা নিয়োজিত তাদের মধ্যে কিডনীর কাজটাই প্রধান এবং সবচেয়ে বেশি। কিডনিকে ডাক্তাররা বলে থাকেন শরীরের ছাঁকনি। ছাঁকনি যেমন ছেঁকে ছেঁকে ভালো যা
সাইনোসাইটিসের প্রদাহজনিত কারণ ও সমাধান
সাইনোসাইটিস ও হিজামা:
সাইনোসাইটিস আমাদের দেশে খুবই সাধারণ একটি রোগ। এ রোগে অল্প বয়সীরা খুব দ্রুত আক্রান্ত হন। শীত ও বর্ষাকালে এর প্রকোপ বেড়ে যায়। সাইনোসাইটিস খুব মারাত্মক কোনো রোগ নয়। কিন্তু এর কারনে আক্রান্ত ব্যক্তির ভোগান্তির শেষ থাকে না। সাইনোসাইটিস জনিত মাথা ব্যথাকে প্রায়ই টেনশনের কারণেই হয় বলে ধারনা করা হয়।
সাইনোসাইটিস অনেক কারণে হয়ে থাকে। সাধারণভাবে যে সব কারণে হতে পারে সেগুলো হচ্ছে-নাকের ইনফেকশন, নাকের প্যাক, নাকের বাঁকা হাড়, নাকের মাংস ফুলে বড় হয়ে যাওয়া, নাকের পলিপ ইত্যাদি। দূষিত পানি কিংবা উচ্চমাত্রার ক্লোরিনযুক্ত পানিতে গোসল করলে পানি সাইনাসে প্রবেশ করে ইনফেকশন করতে পারে। আবার যে কোন আঘাতের কারণে সাইনাস ছিদ্র হয়ে উন্মুক্ত হলে ইনফেকশন হতে পারে।
দাঁতের ইনফেকশন মাড়ির একদম শেষ প্রান্তের দুটি দাঁত তুলে ফেলার সময় দাঁতের গোড়া দিয়ে সাইনাস উন্মুক্ত হয়ে পড়তে পারে এবং ইনফেকশন হতে পারে।
সাইনোসাইটিস-এর মূল উপসর্গ মাথা ব্যথা। এই ব্যথা চোখের নিচে এবং কপালে থাকে। এছাড়া মুখমন্ডল ও মাথার বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যথা হতে পারে। কোন সাইনাসে ইনফেকশন হয়েছে সে অনুযায়ী এই ব্যথার অঞ্চল পরিবর্তিত হয়। তবে ব্যথা নাকের গোড়ায়, উপরের চোয়ালের উপরে, চোখের নিচে, কপালে ও মাথার পিছন দিকে যে কোন স্থানে হতে পারে। ফুলে যেতে পারে চোখের নিচের কিংবা উপরের অংশের পাতা। চিবুক কিছুটা লাল হয়ে ফুলে যেতে পারে। নাকের ভিতরের পুঁজ একটি নির্দিষ্ট স্থান থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা যাবে। নাকের ভিতরের মাংসগুলো ফোলা থাকতে পারে। নাকের হাড় বাঁকা থাকতে পারে। শারীরিক উপসর্গের মধ্যে রয়েছে- গা ম্যাজম্যাজে ভাব, জ্বর, শরীর ব্যথা ইত্যাদি।
সাইনোসাইটিস এর চিকিৎসা:
-সাইনোসাইটিস এর চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয় হাই পাওয়ারের এন্টিবায়োটিসহ নানা ধরণের পাওয়ারফুল ওষুধ। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যথানাশক ওষুধ (পেইন কিলার) ব্যবহার করা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় ঝুকিপূর্ণ ও ব্যয়বহুল অপারেশনের। অনেকক্ষেত্রে অপারেশন করেও ভাল ফলাফল পাওয়া যায় না। আবার সাইনাস ফিরে আসে।
সাইনোসাইটিস এর চিকিৎসায় হিজামা :
* সাইনোসাইটিসের ব্যথা থেকে মুক্তির জন্য অত্যান্ত কার্যকরি চিকিৎসা হচ্ছে হিজামা।* হিজামা বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে শরীরের নিদৃষ্ট পয়েন্টে থেরাপি নেওয়া।
* ঝুকিহীন ও সাইডএফেক্ট মুক্ত হিজামা ব্যবহার করুন। ব্যথামুক্ত জীবন যাপন করুন।
* রোগ ও রোগীভেদে একাধিক সেশনের হিজামা থেরাপী দরকার হয়।
__________________________________________________________________________________________________________________________________
সাইনোসাইটিসের ব্যথা মূলত কোনো সাইনাস আক্রান্ত হয়েছে, তার ওপর অনেকাংশ নির্ভর করে। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, ম্যাক্সিলারি সাইনাসের ব্যথা ও ম্যাক্সিলারি সাইনাসের অবস্থানের ওপর, অর্থাৎ নাকের পাশে, গাল, দাঁত কিংবা মুখ বা মুখমণ্ডলের আশপাশেও ব্যথা হয়ে থাকে। এ ধরনের মাথাব্যথার সঙ্গে সঙ্গে মাথার মধ্যে হালকা শূন্যতা অনুভূত হয়ে। সাইনাস যখন আক্রান্ত হয়, তখন তার নিঃসৃত পুঁজজাতীয় পদার্থ নাকের মধ্যে এসে প্রদাহের সৃষ্টি করে। সাইনাস ফুলে অনেক সময় নাক বন্ধের কারণ হয়ে দেখা দিতে পারে। নাকের মধ্যে কোনো বাধা, যেমন—ডিএনএস বা নাকের মাংস বড় হয়ে যাওয়া সাইনোসাইটিসের কারণে হতে পারে। সুতরাং এসব কারণ উদঘাটন সাইনোসাইটিস রোগের মুখ্য উদ্দেশ্য হয়ে থাকে।
সাইনোসাইটিসের প্রদাহজনিত কারণে নাক থেকে পুঁজ বা পুঁজজাতীয় পদার্থ বের হয়। এ উপসর্গ ছাড়াও শিশু-কিশোরদের সাইনোসাইটিসের বাড়তি কিছু উপসর্গ দেখা যায়। বিশেষ করে তাদের চোখ ও চোখের পাতা ফোলা ফোলা থাকে, মাঝেমধ্যে নাক বন্ধ, মুখ হাঁ করে ঘুমানো, মুখ ও নাক থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়া, নাক ডাকা, অত্যধিক লালাঝরা, ঘন ঘন কাশি, আবার কোনো কোনো সময় বমি ইত্যাদি নিয়মিত হতে থাকে। প্রায়ই এমন অনেক রোগী দেখা যায় যারা সব সময়ই অস্বস্তি অনুভব করেন । মাথাব্যথা, ভারি আর নাক জ্বালাপোড়া করে কিন্তু জানেন না কেন? এ ধরনের রোগীর সাইনোসাইটিস হতে পারে। এটি অতি পরিচিত রোগ। শতকরা ২৫ ভাগ মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। আমাদের নাকের চারপাশের অস্থিগুলোর পাশে বাতাসপূর্ণ কুঠরি থাকে। এদের সাইনাস বলে।
মুখমন্ডলের হাড়ের ভিতরে কতগুলো ফাঁপা জায়গা আছে তাকে সাইনাস বলে। সাইনাসের কাজ হলো মাথাকে হালকা রাখা, মাথাকে আঘাত থেকে রক্ষা করা, কণ্ঠস্বরকে সুরেলা রাখা, দাঁত ও চোয়াল গঠনে সহায়তা করা। যদি কোনো কারণে এ সাইনাসগুলোয় প্রদাহ সৃষ্টি হয়, তখন তাকে সাইনোসাইটিস বলে। সাইনোসাইটিস ব্যাকটেরিয়া-জনিত ইনফেকশন, অ্যালার্জি অথবা অটোইমিউন ডিজিজ ইত্যাদি কারণে হয়ে থাকে। বৈশ্বিক এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ১০০ জনের মধ্যে ৫ থেকে ১০ শতাংশ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে ঠাণ্ডার দেশে এই রোগে আক্রান্তদের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পায়।
সমস্যা বা রোগের কারণ
দাঁত, চোখ, নাকের অসুখ থেকে সাইনোসাইটিস হতে পারে
ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা এলার্জির কারণেও সাইনোসাইটিস হয়ে থাকে
রোগের লক্ষণ ও উপসর্গ
সাইনোসাইটিস রোগে প্রচন্ড মাথাব্যথা হয়। সকালে কম থাকে, দুপুরের দিকে ব্যথার তীব্রতা বেড়ে যায় আবার বিকেলের দিকে সামান্য কমে যায়
মাথা নাড়াচাড়া করলে, হাঁটলে বা মাথা নিচু করলে ব্যথার তীব্রতা আরো বেড়ে যায়
জ্বর জ্বর ভাব থাকে, কোনো কিছুতেই ভালো লাগে না এবং অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে যায়
নাক বন্ধ থাকে। পরীক্ষা করলে নাকের ভেতর পুঁজ পাওয়া যেতে পারে
সাইনাস এর এক্স রে করলে সাইনাস ঘোলাটে দেখায়।
সাইনাসের ইনফেকশন
নাকের এলার্জি থাকলে, নাকের হাড্ডি বাঁকা থাকলে, নাকের ভেতর বাইরের কিছু ঢুকলে এবং এডিনয়েড (নাকের পেছনের টনসিল) বড় হলে
দাঁতের ইনফেশন থেকে বা দাঁত তুলতে গিয়েও সাইনাসে ইনফেকশন হতে পারে
সাইনাসের হাড্ডি ফেটে গেলেও এরূপ হতে পারে
ময়লা পানিতে ঝাঁপ দিলে ঐ পানি নাকের ভেতর দিয়ে সাইনাসে ঢুকেও এ ধরণের সমস্যা তৈরি করতে পারে
এছাড়াও অপুষ্টি, আবহাওয়া দূষণ এবং ঠান্ডা স্যাঁতসেতে আবহাওয়ায় এই রোগ বেশি হয়।
সাইনোসাইটিস-এর জটিলতা
সাইনাসগুলো চোখ এবং ব্রেইনের পাশে থাকে বলে সাইনাসের ইনফেকশন হলে তা চোখ এবং মস্তিষ্কেরও জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। যেমন-
অরবিটাল সেলুলাইটিস এবং এবসেস বা চোখের ভেতরের ইনফেকশন।
মেনিনজাইটিস বা ব্রেইনের পর্দার প্রদাহ।
এক্সট্রাডুরাল এবং সাবডুরাল এবসেস।
অস্টিওমায়েলাইটিস (মাথার অস্থির প্রদাহ)।
কেভেরনাস সাইনাস থ্রম্বোসিস প্রভৃতি।
কাজেই দেখা যাচ্ছে, সাইনোসাইটিসের কারণে চোখের ভেতরে ইনফেকশন ঢুকে চোখটি নষ্ট করে দিতে পারে, আবার মাথার ভেতর ইনফেকশন ঢুকে মেনিনজাইটিস এমনকি ব্রেইন এবসেসের মতে মারাত্মক জটিল রোগের জন্ম দিতে পারে।
আপনারা সাইনোসাইটিসের জন্য বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন, কেউ কেউ অপারেশনও করেছেন, কিন্তু ফলাফল শূণ্য। তাই হিজামাই একমাত্র সাইনোসাইটিসের সঠিক চিকিৎসা। এ চিকিৎসায় কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
বিশ্বাসের সাথে একবার হিজামা করেই দেখুন
একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার যদি আমাকে বলে যে, আপনার এই সমস্যা হয়েছে আপনার ইসিজি, আল্ট্রা, এনজিওগ্রাম,এম আর আই,সিটিস্ক্রিন, হরমোন টেস্ট ইত্যাদি করাতে হবে। আমি ডাক্তারের কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করি। এরজন্য ঋণ করে হাজার হাজার টাকা ব্যয় করি। কারন, ডাক্তারের কথায় আমার বিশ্বাস আছে। উনি বাংলাদেশের অনেক বড় ডাক্তার। উনার চিকিৎসা কি ভুল হতে পারে?
অথচ…
আমার আপনার সকলের সৃষ্টিকর্তা, সকল রোগের সৃষ্টিকর্তা এবং রোগ থেকে শিফা দানকারী আমার আপনার অতি আপনজন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তার প্রিয় হাবীব রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে জানিয়েছেন:
★ মধুর মধ্যে শিফা নিহিত ।
★ কালোজিরায় শিফা নিহিত ।
★ হিজামায় শিফা নিহিত ।
★ সূরা ফাতিহায় শিফা নিহিত ।
★ ইস্তিগফারে শেফা নিহিত।
★ সাদাক্বাহয় শেফা নিহিত।
কিন্তু আমরা এর কোনোটাতেই বিশ্বাস করতে পারিনা। কিছুটা বিশ্বাস যদিও আছে তাও সন্দেহের সমুদ্রে টলমান। এই সন্দেহ সহজে দূর হওয়ার নয়, তবে দূর করতে হবে। হাজার হাজার টাকা খরচ করে চিকিৎসা নেয়ার আগে একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চিকিৎসা ইয়াক্বীনের সাথে গ্রহণ করে দেখতে পারি। আল্লাহ চাহেতো সুন্নাত এবং আরোগ্য দুটোই হাসিল হবে ইনশাআল্লাহ।
মনে রাখবেন হিজামা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ একটি হারানো সুন্নাহ।
হিজামা সমাচার:
হিজামা কী?
হিজামা হল এমন একটি প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি, যাতে মানুষের সকল প্রকার শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক সুস্থতা বিদ্যামান রয়েছে। যাকে বাংলায় শিঙ্গা এবং ইংরেজিতে Cupping therapy বলা হয়।
হিজামার পদ্ধতি:
শরীরের নির্দিষ্ট কিছু অংশ থেকে মেশিনের সাহায্যে অথবা শিঙ্গার সাহায্যে রক্ত চুষে নেয়া বা বের করে ফেলা। এরদ্বারা ভেতরের দূষিত রক্ত দূর হয়ে যায়। যারফলে মানুষ প্রশান্তি অনুভব করে।
কেন হিজামা করাবেন?
আপনার রোগ হলে যেমন ডাক্তারের কাছে যান। তারপর প্রয়োজন পড়লে অস্ত্রপোচারও করান। তেমনি আপনার রোগের জন্য হিজামা করাবেন। তাহলে ফায়দা স্বরূপ রোগ থেকে ইনশাআল্লাহ মুক্তি পাবেন এবং রাসূল সাঃ এর একটি সুন্নাতের উপরও আমল করা হলো।
হিজামা সংক্রান্ত হাদীসঃ
★ হযরত আবু হুরাইরা রাঃ থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “জিবরীল আমাকে জানিয়েছেন যে, মানুষ চিকিৎসার জন্য যতসব উপায় অবলম্বন করে, তম্মধ্যে হিজামাই হল সর্বোত্তম।” আল-হাকিম, হাদীছ নম্বর: ৭৪৭০
★ হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “কেউ হিজামা করতে চাইলে সে যেন আরবী মাসের ১৭, ১৯ কিংবা ২১ তম দিনকে নির্বাচিত করে। রক্তচাপের কারণে যেন তোমাদের কারো মৃত্যু না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখবে।” সুনানে ইবনে মাজা, হাদীছ নম্বর: ৩৪৮৬
★ হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, “আমি মেরাজের রাতে যাদের মাঝখান দিয়ে গিয়েছি, তাদের সবাই আমাকে বলেছে, হে মুহাম্মদ, আপনি আপনার উম্মতকে হিজামার আদেশ করবেন।” সুনানে তিরমিযী হাদীছ নম্বর: ২০৫৩
★ হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “গরম বৃদ্ধি পেলে হিজামার সাহায্য নাও। কারণ, কারো রক্তচাপ বৃদ্ধি পেলে তার মৃত্যু হতে পারে।” আল-হাকিম, হাদীছ নম্বর : ৭৪৮২
★ হযরত জাবির রাঃ থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “নিশ্চয় শেফা রয়েছে।” সহীহ মুসলিম, হাদীছ নম্বর: ২২০৫
★ হযরত আবদুল্লাহ বিন উমর রাঃ থেকে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “খালি পেটে হিজামাই সর্বোত্তম। এতে শেফা ও বরকত রয়েছে এবং এর মাধ্যমে বোধ ও স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়।” সুনানে ইবনে মাজা, হাদীছ নম্বর: ৩৪৮৭
★ হযরত আবদুল্লাহ্ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “হিজামাকারী কতইনা উত্তম লোক। সে দূষিত রক্ত বের করে মেরুদন্ড শক্ত করে ও দৃষ্টিশক্তি প্রখর করে।”
সুনানে তিরমিযী, হাদীছ নম্বর: ২০৫৩
হিজামা (CUPPING) এর মাধ্যমে যে সব রোগের চিকিৎসা করা হয়ে থাকেঃ
★ মাইগ্রেন জনিত দীর্ঘমেয়াদী মাথাব্যথা
★ রক্তদূষণ
★ উচ্চরক্তচাপ
★ ঘুমের ব্যাঘাত (insomnia)
★ স্মৃতিভ্রষ্টতা (perkinson’s disease)
★ অস্থি সন্ধির ব্যাথা/ গেটে বাত
★ ব্যাক পেইন
★ হাঁটু ব্যাথা
★ দীর্ঘমেয়াদী সাধারন মাথা ব্যাথা
★ ঘাড়ে ব্যাথা
★ কোমর ব্যাথা
★ পায়ে ব্যাথা
★ মাংসপেশীর ব্যাথা (muscle strain)
★ দীর্ঘমেয়াদী পেট ব্যথা
★ হাড়ের স্থানচ্যুতি জনিত ব্যাথা
★ থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা
★ সাইনোসাইটিস
★ হাঁপানি (asthma)
★ হৃদরোগ (Cardiac Disease)
★ রক্তসংবহন তন্ত্রের সংক্রমন
★ টনসিল
★ দাঁত/মুখের/জিহ্বার সংক্রমন
★ গ্যাস্ট্রিক পেইন
★ মুটিয়ে যাওয়া (obesity)
★ দীর্ঘমেয়াদী চর্মরোগ (Chronic Skin Diseses)
★ ত্বকের নিম্নস্থিত বর্জ্য নিষ্কাশন
★ ফোঁড়া-পাঁচড়া সহ আরো অনেক রোগ।
★ ডায়াবেটিস (Diabetes)
★ ভার্টিব্রাল ডিস্ক প্রোল্যাপ্স/ হারনিয়েশান
★ চুল পড়া (Hair fall)
★ মানসিক সমস্যা (Psycological disorder)…সহ আরও অনেক রোগ।
আরব দেশ সমূহ এবং ভারত পাকিস্তানে হিজামার বহুল প্রচলন থাকলেও আমাদের দেশে হিজামা লাগানোর খুব একটা প্রচলন নেই। জাপান, আমেরিকা, চীনেও আধুনিক পদ্ধতিতে হিজামা/cupping চিকিৎসা গ্রহন করা হচ্ছে। রাসূল সাঃ এর যুগে এই চিকিৎসা খুব বেশি প্রচলিত ছিলো। রাসূল সাঃ একদিন ঘোড়া থেকে পড়ে গিয়ে সাথে সাথে আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে হিজামা করিয়েছেন। যেহেতু আল্লাহ তায়ালার রাসূল হিজামা নিজে করেছেন এবং অন্যদের করতে উৎসাহ প্রদান করেছেন তাহলে নিশ্চয়ই এরমধ্যে বহু উপকার রয়েছে। যার কিছু নমুনা উপরেও পেশ করা হয়েছে। তাই হিজামা করুন, অন্যকে করতে উৎসাহ দিন। একটা সুন্নাতকে জীবিত করুন। আমি নিজে হিজামা করেছি।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এই চিকিৎসা গ্রহন করার এবং ইখলাসের সাথে একটি সুন্নাতকে জীবিত করার তাউফিক দান করুন। আমীন।
টাক সমস্যার সমাধানে হিজামা
যাদের চুল পড়ছে,অল্প বয়সেই টাক পড়ে মাথার তালু ফাঁকা হচ্ছে তাদের কাছে যদি চিকিৎসার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়,তাহলে শতকরা ৯৫ ভাগ রোগীই বলবেন চুলের জন্যে যেসব চিকিৎসা তারা নিয়েছেন তাতে তারা সন্তুষ্ট ছিলেন না!
New York Times এর একটা প্রতিবেদনে উঠে এসছে চুলের পেছনে যে পরিমাণ মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার গড়ে আমেরিকানরা খরচ করেন তার তুলনায় যে উপকার তারা পান সেটা অত্যন্ত নগন্য এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে ক্ষণস্থায়ী!
পুরুষদের ক্ষেত্রে অল্প বয়সেই মাথার তালু থেকে চুল পড়ে যাওয়ার প্রধান কারন মাথার তালুর চুলের গোড়ায় যে Hair follicle রয়েছে তাতে মাত্রাতিরিক্ত Dihydrotestosterone (DHT) জমা হওয়া।
FDA approved যে দু'টো drug চুল পড়া বন্ধে বহুল ব্যবহার হয় তার একটি Minoxidil, যা চুলের গোড়ার blood circulation উন্নত করে। কিন্তু প্রতিদিন ২ বার ১০ চাপ করে স্প্রে নিয়ম মেনে দেওয়া আসলে কঠিন! আবার সবার জন্যে যে এটি ফলদায়ক তাও কিন্তু নিশ্চিত না!
আরেকটি ড্রাগ Fenesteride DHT উৎপাদনে বাঁধা দেয়।কিন্তু sexual desire কে ক্ষতিগ্রস্ত করার ঝুঁকি এর ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কমিয়েছে।
PRP (Platelet rich plasma) চুল পড়া সমাধানে বর্তমান সময়ে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আমরা অনেকেই হয়তো জানিনা FDA কিন্তু PRP কে Hair Transplantation এর medication হিসেবে এখন ও স্বীকৃতি দেয়নি। কিন্তু efficacy- র বিবেচনায় ব্যয়বহুল হলেও এই চিকিৎসা পদ্ধতিকেই এখন সবাই গ্রহণযোগ্য ভাবছেন।
অনেকেই আজকাল জানতে চান আমাদের কাছে --"হিজামার সাথে কী চুল গজানোর কোন যোগসূত্র আছে ?"
মাথায় বিভিন্ন রোগের জন্যেই দেখা যায় হিজামা পয়েন্টস রয়েছে। আমরা যেহেতু বিভিন্ন রোগের জন্যেই হিজামা করি তাই মাথাতেও সংশ্লিষ্ট রোগের জন্যে হিজামা করা হয়েছে বিভিন্ন রোগীর!
আমরা দেখলাম, রোগীদের ভাষ্যমতে এসব জায়গাগুলোতে নাকি খুব দ্রুত চুল গজাচ্ছে এবং আশেপাশের জায়গাগুলোতেও চুল পড়ে যাওয়ার মাত্রা বেশ কমে যাচ্ছে!
থিওরিটিক্যালি চুল গজানোর ক্ষেত্রে হিজামার উল্লেখযোগ্য অবদান আছে। এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত অনেক আগে থেকেই ! যেভাবে হিজামা কাজ করে তা সত্যিই ভীষণ আশান্বিত হবার মত!
১) Androgenic Alopecia তে Causative pathologic substance হল DHT(Dihydrotestosterone), প্রতি সেশন হিজামা তে মাথার তালুর আক্রান্ত জায়গা থেকে কাপিং ব্লাড এর সাথে প্রচুর DHT বের হয়ে আসে।এটি হিজামার excretory benefit এর একটা উদাহরণ।
২) অন্যদিকে হিজামার মাধ্যমে তৈরি হওয়া নাইট্রিক অক্সাইড একটি potent vasodilator, তাই হিজামা local healthy blood circulation promote করে।
চুলের চিকিৎসায় সব প্রচলিত পদ্ধতিগুলোর ব্যর্থতা বা অনিশ্চয়তা দেখে হিজামা কে এদের মাঝে নিয়ে আসার কোন ইচ্ছে ছিল না আমাদের। এর একটা কারন বেশিরভাগ রোগে এই সুন্নাহ চিকিৎসাটি এরই মাঝে আমাদের রোগীদের মাঝে তার নির্ভরতার জায়গা করে নিয়েছে! সেটা ধরে রাখাটা আমাদের জন্যে দরকার! Hairfall এর চিকিৎসায় কথা দেয়ার ঝুঁকি আছে,অনিশ্চয়তা আছে!
পরে আমরা ভেবে দেখলাম যদি কারো উপকারে আসে তার জন্যে হলেও আমরা চেষ্টা করে দেখতে পারি!
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিজামাকে 'সর্বোৎকৃষ্ট' চিকিৎসা বলেছেন। তাহলে চুলের চিকিৎসাতেই বা কেন নয়?
মাথায় হিজামা করালে যে লাভগুলো হবে :
১) এটি একসাথে দুটি pathologic target কে cover করে। তাই চুল পড়া বন্ধে প্রতিদিন শ্যাম্পু, লোশন, স্প্রের অত্যাচার থেকে বাঁচতে হিজামা নতুন আশা বয়ে নিয়ে আসবে।
২) খরচের দিক বিবেচনায় হিজামা PRP এর তুলনায় অনেক বেশি সহজলভ্য।
৩) Prophetic Medicine এর অংশ হিসেবে হিজামা একদম নিরাপদ।
৪) চিকিৎসা হিসেবে একটা সুন্নাহকে বেছে নেওয়ার spiritual benefits and rewards তো আছেই!
৫) মাথা ব্যথা বা রিলাক্সেশন এ মাথায় হিজামা অত্যন্ত উপকারী। চুলের জন্যে চিকিৎসা নিলেও এই উপকারগুলো বাড়তি পাওয়া।
হিজামা সেশন প্ল্যান :
মোট সেশন : ৪ টি
প্রথম সেশন এর ১৫ দিন পর ২য় সেশন।
২য় সেশন এর ১ মাস পর ৩য় সেশন এবং এর ঠিক ১ মাস পর ৪র্থ সেশন।
এরপর চুলের যত্নে ৩ মাস পর পর অথবা রেসপন্স এর উপর নির্ভর করে ৬ মাস পর পর হিজামা/কাপিং করানো যেতে পারে।
যে বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে :
১) একটা লজিক্যাল এক্সপেক্টেশন রাখবেন। Response vary from person to person! It widely dependent on existing damage to the hair follicles!
হিজামা করে সাথে সাথেই অজস্র চুল আশা করবেন ব্যাপারটা একদম সেরকম না! হিজামা ন্যাচারাল গ্রোথ বুস্ট আপ করে। তাই হিজামা করে হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টেশন এর মত কৃত্রিম পরিবর্তন আশা করা যাবেনা।
প্রতিটা সেশনেই পরিবর্তন আসে। তাই ধৈর্য্য রাখতে হবে কমপক্ষে ৩ মাস। চুল পড়ার হার যে কমে যাচ্ছে এই পরিবর্তন টা সবার আগে বুঝতে পারা যাবে।
২) ট্রিটমেন্ট শিডিউল মেনে চলার মানসিকতা থাকতে হবে। মাঝপথে চিকিৎসা বন্ধ করবেন না। সেক্ষেত্রে বুঝে শুনে প্ল্যান করুন।
৩) হিজামার ব্যাপারে যেটা ভাল দিক সেটা হল এর কোন সাইড এফেক্ট নেই যা ওষুধগুলোতে আছে! তাই দীর্ঘদিল বিনা সংকোচে হিজামার উপর নির্ভর করা যায়। রোজ রোজ চুলের পেছনে সময় দেয়ার ঝামেলাও নেই।
তাই চুলের চিকিৎসায় যারা হাঁপিয়ে উঠেছেন তারা এই সুন্নাহ চিকিৎসা পদ্ধতিটি বেছে নিতে পারেন। আমরা বিশ্বাস করি যেকোন চিকিৎসা পদ্ধতির চেয়ে কাপিং/হিজামা আপনার কাছে অনেক বেশি কার্যকর ও সহজতর মনে হবে।
হিজামার ব্যপারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
হিজামার ব্যপারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হচ্ছে এই যে:- নাইট্রিক অক্সাইড থিউরি আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পৃথিবীর প্রতিটি বস্তু সৃষ্টি করার পাশাপাশি তা সঠিকভাবে তার কার্যক্রম পরিচালিত করতে পারে, সেজন্য এমন কিছু বস্তুও ঠিক করেছেন, যা পরিচালিত হতে ঐ বস্তুগুলোর প্রয়োজন। ঐ বস্তুগুলো ছাড়া পরিচালিত হওয়া তো দূরের কথা, ঐ বস্তুটিও সঠিকভাবে থাকতে পারবে না। তেমনি হচ্ছে মানব দেহ। এই দেহের মাঝেও আল্লাহ তাআলা এমন কিছু জিনিস রেখেছেন যার মাধ্যমে মানব দেহ বেঁচে থাকে।
ল্যাব টেস্টঃ হিজামার বিজ্ঞানভিত্তিক উপকারিতা
দামেস্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের (Damascus University) সাবেক ডীন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নাবীল আল শরীফ এর অধীনে ২০০১ সালে হিজামার উপকারিতা যাচাইয়ের জন্য পরীক্ষাগারে বিজ্ঞানভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। পরীক্ষাটি ৩০০ জন ব্যক্তির উপর পরিচালিত হয়। পরিচালিত পরীক্ষায় নিম্নোক্ত তথ্যসমূহ বেরিয়ে আসে; যা হিজামার উপকারিতার বৈজ্ঞানিক প্রমাণ বহন করে-
১. উচ্চ রক্তচাপের ক্ষেত্রে রক্তচাপ কমে স্বাভাবিক পর্যায়ে এসেছে।
২. নিম্ম রক্তচাপের ক্ষেত্রে রক্তচাপ বেড়ে স্বাভাবিক পর্যায়ে এসেছে।
৩. ECG এর পূর্বের গ্রাফের তূলনায় পরের গ্রাফে তাৎপর্যপূর্ণ উন্নতি পরিলক্ষিত হয়েছে।
৪. ESR কমে স্বাভাবিক পর্যায়ে এসেছে।
৫. RBC এর সংখ্যা স্বাভাবিক হয়েছে।
৬. Polycythemia এর ক্ষেত্রে Hemoglobin কমে স্বাভাবিক হয়েছে।
৭. Hemoglobin স্বল্পতার ক্ষত্রে এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে স্বাভাবিক হয়েছে। এটি নতুন নতুন স্বাভাবিক RBC উৎপন্ন হওয়ায় ইংগিত প্রদান করে; যা শরীরের কোষ সমূহে অক্সিজেনের প্রবাহ বৃদ্ধি করে থাকে।
৮. হিজামা গ্রহনকারীদের ৬০% ক্ষেত্রে রক্তে Leukocyte বৃদ্ধি পেয়ে স্বাভাবিক মাত্রায় পৌঁছেছে।
৯. সকল Rheumatic রোগাক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে Neutrophil বৃদ্ধি পেয়ে স্বাভাবিক পর্যায়ে এসেছে।
১০. রক্তের শ্বেতকণিকা (WBC) ৭১.৪% ক্ষেত্রে বেড়েছে। এটি প্রমান করে যে Rheumatic ও অন্যান্য প্রদাহজনিত রোগ হিজামা করার পর সেড়ে গেছে।
১১. হাঁপানি রোগীদের ৮৩.৩% ক্ষেত্রে Neutrophil এর সংখ্যা বেড়েছে।
১২. হিজামা করানোর কারনে Neutrophil এর অস্বাভাবিক বৃদ্ধি কমে গিয়ে স্বাভাবিক পর্যায়ে এসেছে।
১৩. হৃদরোগীদের ৭৬.৯% ক্ষেত্রে Neutrophil সংখ্যা কমে স্বাভাবিক হয়েছে।
১৪. রক্তের Thrombocyte ৫০.৬% ক্ষেত্রে বৃদ্ধি পেয়েছে।
১৫. অনুচক্রিকার স্বল্পতার সকল ক্ষেত্রে তা বৃদ্ধি পেয়ে স্বাভাবিক মাত্রায় পৌঁছেছে।
১৬. Essential Thrombocythemia এর ৫০% ক্ষেত্রে Thrombocytes কমে গিয়ে স্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছেছে।
১৭. ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের রক্তে চিনির পরিমাণ ৯২.৫% ক্ষেত্রে কমেছে।
১৮. রক্তের বৃদ্ধিপ্রাপ্ত Creatinine ৬৬.৬৬ ক্ষেত্রে কমেছে।
১৯. সকল ক্ষেত্রে হিজামার মাধ্যমে বের হওয়া রক্তে Creatinine এর পরিমান খুবই বেশী ছিল।
২০. যেসকল রোগীদের রক্তে Creatinine বেশী ছিল, হিজামার পর তাদের ৫৭% ক্ষেত্রে রক্তে এর মাত্রা কমে গিয়েছিল।
২১. ৬৬.৬৬% ক্ষেত্রে রক্তে Uric acid এর মাত্রা কমে গিয়েছে।
২২. Uric acid বৃদ্ধির ফলে যেসকল অসুবিধা দেখা দিয়েছিল, ৭৩.৬৮% ক্ষেত্রে সেসকল অসুবিধা দূর হয়েছে।
২৩. যাদের রক্তে Urea level বেড়ে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে ৮০% ক্ষেত্রে তা নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
২৪. যাদের রক্তে SGPT বেড়ে গিয়েছিল, ৮০% ক্ষেত্রে তাদের উক্ত মাত্রা স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে গিয়েছে। এটি হিজামা করানোর দ্বারা যকৃতের কার্যকারিতা বৃদ্ধির ইংগিত বহন করে।
২৫. হিজামার পর কেন ECG এর উন্নতি হয়েছিল; SGPT এর নিম্নগামীতার মাধ্যমে তার ব্যাখ্যা পাওয়া গেল।
২৬. Alkaline phosphate এর বৃদ্ধিপ্রাপ্ত মাত্রা ৬২.৮২% ক্ষেত্রে কমে স্বাভাবিক পর্যায়ে।
২৭. ৫৪.৯% ক্ষেত্রে Amylase এর মাত্রা কমেছে।
২৮. সকল ক্ষেত্রে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত Albumin কমে স্বাভাবিক হয়েছে।
২৯. রক্তের বর্ধিত Cholesterol এর মাত্রা ৮৩.৬% ক্ষেত্রে কমেছে।
৩০. যাদের রক্তে Triglyceride অধিক ছিল, হিজামা করানোর পর তাদের ৭৫% ক্ষেত্রে তা কমেছে।
৩১. Ca, Na, K আয়নের মাত্রা ৯০% ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে।
৩২. বর্ধিত CPK ৬৬.৬৬% ক্ষেত্রে কমে স্বাভাবিক হয়েছে।
৩৩. হিজামার মাধ্যমে বের হওয়া রক্তে সকল RBC-ই ছিল অস্বাভাবিক আকৃতির। যেমনঃ Hypochromic, Burr, Target, Crenated, Spherocytes, Poikilocytes, Anisocytes, Schistocytes, Acanthocytes ইত্যাদি।
৩৪. বের হওয়া রক্তে Leukocyte এর সংখ্যা শিরার রক্তের ১০% এরও কম ছিল। এটি শরীরের Immunity রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান; যা হিজামার মাধ্যমে বের না হওয়ার ইংগিত বহন করে।
৩৫. ৬৬% ক্ষেত্রে রক্তে লৌহের ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে।
৩৬. প্রায় ৯৩% ক্ষেত্রে CPK এবং LDH স্বাভাবিক মাত্রায় ছিল।
৩৭. শিরার রক্তে TIBC এর স্বাভাবিক মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে ২৫০-৩৭০ মাইক্রো গ্রাম। কিন্তু হিজামার মাধ্যমে বের হওয়া রক্তে TIBC এর মাত্রা ছিল প্রতি ডেসিলিটারে ৪২২-১০৫৭ মাইক্রো গ্রাম অর্থাৎ খুবই বেশী।
পরীক্ষাটি এই ইংগিত দেয় যে হয়তো এমন বিশেষ কোন কারণ রয়েছে; যার ফলে হিজামার কর্তিত অংশের মাধ্যমে পর্যাপ্ত লৌহ অণু বেরিয়ে আসতে পারেনা। বরং লৌহ অণুগুলো রক্তনালীতে রয়ে যায়; যাতে নতুন নতুন RBC উৎপাদনে ব্যবহৃত হতে পারে।
সুতরাং, উপরোক্ত Laboratory Test থেকে এটা দিবালাকের ন্যায় সুস্পষ্ট যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে হিজামা গ্রহণের জন্য যে তাগিদ দিয়েছেন; তা সত্যিই আমাদের জন্য অত্যন্ত কল্যানকর।
দামেস্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের (Damascus University) সাবেক ডীন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নাবীল আল শরীফ এর অধীনে ২০০১ সালে হিজামার উপকারিতা যাচাইয়ের জন্য পরীক্ষাগারে বিজ্ঞানভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। পরীক্ষাটি ৩০০ জন ব্যক্তির উপর পরিচালিত হয়। পরিচালিত পরীক্ষায় নিম্নোক্ত তথ্যসমূহ বেরিয়ে আসে; যা হিজামার উপকারিতার বৈজ্ঞানিক প্রমাণ বহন করে-
১. উচ্চ রক্তচাপের ক্ষেত্রে রক্তচাপ কমে স্বাভাবিক পর্যায়ে এসেছে।
২. নিম্ম রক্তচাপের ক্ষেত্রে রক্তচাপ বেড়ে স্বাভাবিক পর্যায়ে এসেছে।
৩. ECG এর পূর্বের গ্রাফের তূলনায় পরের গ্রাফে তাৎপর্যপূর্ণ উন্নতি পরিলক্ষিত হয়েছে।
৪. ESR কমে স্বাভাবিক পর্যায়ে এসেছে।
৫. RBC এর সংখ্যা স্বাভাবিক হয়েছে।
৬. Polycythemia এর ক্ষেত্রে Hemoglobin কমে স্বাভাবিক হয়েছে।
৭. Hemoglobin স্বল্পতার ক্ষত্রে এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে স্বাভাবিক হয়েছে। এটি নতুন নতুন স্বাভাবিক RBC উৎপন্ন হওয়ায় ইংগিত প্রদান করে; যা শরীরের কোষ সমূহে অক্সিজেনের প্রবাহ বৃদ্ধি করে থাকে।
৮. হিজামা গ্রহনকারীদের ৬০% ক্ষেত্রে রক্তে Leukocyte বৃদ্ধি পেয়ে স্বাভাবিক মাত্রায় পৌঁছেছে।
৯. সকল Rheumatic রোগাক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে Neutrophil বৃদ্ধি পেয়ে স্বাভাবিক পর্যায়ে এসেছে।
১০. রক্তের শ্বেতকণিকা (WBC) ৭১.৪% ক্ষেত্রে বেড়েছে। এটি প্রমান করে যে Rheumatic ও অন্যান্য প্রদাহজনিত রোগ হিজামা করার পর সেড়ে গেছে।
১১. হাঁপানি রোগীদের ৮৩.৩% ক্ষেত্রে Neutrophil এর সংখ্যা বেড়েছে।
১২. হিজামা করানোর কারনে Neutrophil এর অস্বাভাবিক বৃদ্ধি কমে গিয়ে স্বাভাবিক পর্যায়ে এসেছে।
১৩. হৃদরোগীদের ৭৬.৯% ক্ষেত্রে Neutrophil সংখ্যা কমে স্বাভাবিক হয়েছে।
১৪. রক্তের Thrombocyte ৫০.৬% ক্ষেত্রে বৃদ্ধি পেয়েছে।
১৫. অনুচক্রিকার স্বল্পতার সকল ক্ষেত্রে তা বৃদ্ধি পেয়ে স্বাভাবিক মাত্রায় পৌঁছেছে।
১৬. Essential Thrombocythemia এর ৫০% ক্ষেত্রে Thrombocytes কমে গিয়ে স্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছেছে।
১৭. ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের রক্তে চিনির পরিমাণ ৯২.৫% ক্ষেত্রে কমেছে।
১৮. রক্তের বৃদ্ধিপ্রাপ্ত Creatinine ৬৬.৬৬ ক্ষেত্রে কমেছে।
১৯. সকল ক্ষেত্রে হিজামার মাধ্যমে বের হওয়া রক্তে Creatinine এর পরিমান খুবই বেশী ছিল।
২০. যেসকল রোগীদের রক্তে Creatinine বেশী ছিল, হিজামার পর তাদের ৫৭% ক্ষেত্রে রক্তে এর মাত্রা কমে গিয়েছিল।
২১. ৬৬.৬৬% ক্ষেত্রে রক্তে Uric acid এর মাত্রা কমে গিয়েছে।
২২. Uric acid বৃদ্ধির ফলে যেসকল অসুবিধা দেখা দিয়েছিল, ৭৩.৬৮% ক্ষেত্রে সেসকল অসুবিধা দূর হয়েছে।
২৩. যাদের রক্তে Urea level বেড়ে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে ৮০% ক্ষেত্রে তা নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
২৪. যাদের রক্তে SGPT বেড়ে গিয়েছিল, ৮০% ক্ষেত্রে তাদের উক্ত মাত্রা স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে গিয়েছে। এটি হিজামা করানোর দ্বারা যকৃতের কার্যকারিতা বৃদ্ধির ইংগিত বহন করে।
২৫. হিজামার পর কেন ECG এর উন্নতি হয়েছিল; SGPT এর নিম্নগামীতার মাধ্যমে তার ব্যাখ্যা পাওয়া গেল।
২৬. Alkaline phosphate এর বৃদ্ধিপ্রাপ্ত মাত্রা ৬২.৮২% ক্ষেত্রে কমে স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমেছে।
২৭. ৫৪.৯% ক্ষেত্রে Amylase এর মাত্রা কমেছে।
২৮. সকল ক্ষেত্রে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত Albumin কমে স্বাভাবিক হয়েছে।
২৯. রক্তের বর্ধিত Cholesterol এর মাত্রা ৮৩.৬% ক্ষেত্রে কমেছে।
৩০. যাদের রক্তে Triglyceride অধিক ছিল, হিজামা করানোর পর তাদের ৭৫% ক্ষেত্রে তা কমেছে।
৩১. Ca, Na, K আয়নের মাত্রা ৯০% ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে।
৩২. বর্ধিত CPK ৬৬.৬৬% ক্ষেত্রে কমে স্বাভাবিক হয়েছে।
৩৩. হিজামার মাধ্যমে বের হওয়া রক্তে সকল RBC-ই ছিল অস্বাভাবিক আকৃতির। যেমনঃ Hypochromic, Burr, Target, Crenated, Spherocytes, Poikilocytes, Anisocytes, Schistocytes, Acanthocytes ইত্যাদি।
৩৪. বের হওয়া রক্তে Leukocyte এর সংখ্যা শিরার রক্তের ১০% এরও কম ছিল। এটি শরীরের Immunity রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান; যা হিজামার মাধ্যমে বের না হওয়ার ইংগিত বহন করে।
৩৫. ৬৬% ক্ষেত্রে রক্তে লৌহের ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে।
৩৬. প্রায় ৯৩% ক্ষেত্রে CPK এবং LDH স্বাভাবিক মাত্রায় ছিল।
৩৭. শিরার রক্তে TIBC এর স্বাভাবিক মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে ২৫০-৩৭০ মাইক্রো গ্রাম। কিন্তু হিজামার মাধ্যমে বের হওয়া রক্তে TIBC এর মাত্রা ছিল প্রতি ডেসিলিটারে ৪২২-১০৫৭ মাইক্রো গ্রাম অর্থাৎ খুবই বেশী।
পরীক্ষাটি এই ইংগিত দেয় যে হয়তো এমন বিশেষ কোন কারণ রয়েছে; যার ফলে হিজামার কর্তিত অংশের মাধ্যমে পর্যাপ্ত লৌহ অণু বেরিয়ে আসতে পারেনা। বরং লৌহ অণুগুলো রক্তনালীতে রয়ে যায়; যাতে নতুন নতুন RBC উৎপাদনে ব্যবহৃত হতে পারে।
[লিখাটি 'হিজামা; রক্তমোক্ষণ Cupping Therapy (শুধু চিকিৎসা গ্রহণই নয়, সুন্নতও বটে)' কিতাব থেকে সংকলিত]
সুতরাং, উপরোক্ত Laboratory Test থেকে এটা দিবালাকের ন্যায় সুস্পষ্ট যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে হিজামা গ্রহণের জন্য যে তাগিদ দিয়েছেন; তা সত্যিই আমাদের জন্য অত্যন্ত কল্যানকর।
হিজামা নিয়ে অপচিকিৎসার ব্যাপারে আমাদের একটু সতর্ক দৃষ্টি দেওয়া উচিত। ভুলভাবে হিজামা কে মানুষ চিনুক সেটা যেমন চাই না, তেমনি ভাবে চাই না কারো কারো স্বেচ্ছাচারিতার জন্যে যারা সঠিকভাবে হিজামা করছেন এবং একটা হারানো সুন্নাহকে পুণরায় জাগ্রত করার চেষ্টা করছেন তাদের প্রচেষ্টাটাও প্রশ্নবিদ্ধ হোক।
হিজামা একটি সুন্নাহ। একটি পূর্ণাংগ 'চিকিৎসা' ব্যবস্থা। একে 'অপচিকিৎসা' হিসেবে রূপ দেয়াটা দুঃখজনক।
ভাবছেন হিজামা তে আবার 'অপচিকিৎসা'র সুযোগ কোথায়?
চলুন জেনে নেই এর কয়েকটি...
◼ চাইনিজ কাপ সেট এর প্যাকেট এ দেয়া লিফলেটে বিভিন্ন রোগের জন্যে কাপিং পয়েন্ট কি হবে সেগুলো দেয়া আছে। চাইনিজ ট্রেডিশনাল ড্রাই কাপিং এ যেটা ওরা ফলো করে।
আমরা কিন্তু সবাই জানি সুন্নাহ হিজামা আর এই ড্রাই কাপিং এক না। তাই বিস্মিত হই যখন দেখি হিজামা পয়েন্ট এর রেফারেন্স হিসেবে এসব লিফলেট এদেশে দেদারসে ব্যবহৃত হয়!
প্রতিটা রোগের প্যাথলজি বলে যে একটা ব্যাপার আছে, সেটা নিয়ে যদি আলাদা গুরুত্ব না দেয়া হয় তাহলে সেটা হিজামার সুফল বয়ে আনার ক্ষেত্রে সত্যিই ভালো না।
তাই অপচিকিৎসার শুরুটা হয় প্যাথলজি নিয়ে না ভেবে কাপিং শুরু করায়!
◼ তবে সত্যি বলতে পয়েন্ট নয় বরং হিজামাতে যে স্ক্র্যাচ বা scarification করা হয় সেটাতেই হয় সবচেয়ে বড় গাফিলতি!!
অথচ হিজামার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই ধাপ নিয়ে বিন্দুমাত্র হেলাফেলা পুরো উদ্দেশ্যটা ব্যাহত করতে পারে!
◼ 'রক্ত' বের হওয়াই যদি হিজামার মূল কথা হয় তাহলে খুব সহজেই সেটা করা সম্ভব! এক্সপার্ট না হয়েও সেটা সম্ভব!
যিনি হিজামা করছেন তিনি ব্লেড টাতে সামান্য একটু প্রেশার দিলেন তো সরাসরি পৌঁছে গেলেন আপনার স্কিন এর Dermis এর blood capillaries (রক্তনালী) এ। তখন সবার অগোচরে কিন্তু এগুলোই কাটা পড়বে। কাপ রক্তে ভরে যাবে! আর আপনি ভাববেন সফলভাবে আপনার হিজামা শেষ হয়েছে!
এভাবে যেই প্রসিডিউর করা হয় সেটা কে হিজামা না বলে 'রক্তক্ষরণ' বলাই ভালো।
◼ হিজামা যেই তায়্যিবাহ মেকানিজম (Taibah theory) এ কাজ করে তাতে এই রক্তক্ষরণ এর কোন স্থান নেই। খুব programmed way তে স্কিন এর একদম বাইরের লেয়ার (Epidermis) হলো এর টার্গেট। যেখানে কোন রক্তনালী নেই। আর তাই এগুলো কাটা পড়ার সুযোগও নেই! কাপ এ ব্লাড এর মত দেখতে ফ্লুইড জমবে। কিন্তু এর পুরোটাই Dermal vessels থেকে suction এ আসা প্লাজমা এবং সাথে অল্প কিছু Red cell ভেঙে এসে মেশা হিমোগ্লোবিন (Haemoglobin)।
শুধু এই Epidermis আর Dermis এর মাঝে তফাত মিস করা মানেই হেরে যাওয়া।
◼ হিজামাতে করা এইসব ছোট ছোট স্ক্র্যাচ গুলোর এরাবিক নাম 'Shartat Mihjam'। এটার ৫/৭ টা criteria আছে। আর স্পষ্ট কথায়, এই criteria যদি পূরণ না হয় তবে সেই হিজামা 'অপচিকিৎসা'র নামান্তর হবে।
এরকম আরো অসংখ্য টেকনিক্যাল দিক আছে যা না মানলে হিজামার উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়।
তাই ইউটিউবে টিউটোরিয়াল দেখে কখনোই হিজামা শেখায় পূর্ণতা আনা সম্ভব না। সম্ভব না যদি স্কিন এর গঠন নিয়ে কোন ধারণা না থাকে তখনও!
হিজামা এক্সপার্ট এর পক্ষে সব স্ক্র্যাচ এর length & depth প্রায় একই রাখা, সমান্তরাল রেখায় রাখা, একই distance বজায় রেখে একটার পর একটা করে যাওয়া সম্ভব বলেই তারা এক্সপার্ট। আর সেটা একদিনে হয়না!আর হিজামাতে এই এক্সপার্টাইজ এর কোন বিকল্প নেই!
আর আমাদের বাইতুল হিজামায় রয়েছে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মহিলা এবং পুরুষ হিজামা থেরাপিষ্ট। আমাদের প্রতিষ্ঠানটির বৈশিষ্ট হচ্ছে পেশেন্টদের আতঙ্ক দূর করার লক্ষে আমরা সার্জিকাল ব্লেডের পরিবর্তে থ্রি নিডেল পেন ডিভাইস ব্যবহার করে থাকি। আমাদের এই সুন্নাহ ভিত্তিক চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানটিতে আপনারা সকলেই আমন্ত্রীত।
পেশেন্টদের নিয়মিত জিজ্ঞাসা ?
---"হিজামাও করাব আবার ঔষধও খাবো? এতে ঔষধের গুণাগুণ কমে যাবে না?"
---"অন্য কোন রিয়্যাকশান হবার সম্ভাবনা নেই তো?"
---"কীভাবে বুঝব যে, হিজামা থেকে উপকার পাচ্ছি নাকি ওষুধে?"
তাদের উদ্দেশ্যে আমাদের কথা:
হিজামা সত্যিকার অর্থেই খুবই চমৎকার এবং ফলপ্রসূ একটা চিকিৎসা ব্যাবস্থা। এবং হ্যা, হিজামাকে একক চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবেই নেয়া যেতে পারে। কিন্তু যারা বিভিন্ন রোগে নানান ধরনের ওষুধ খান তাদেরকে আমরা চট করেই বলি না যে শুধু হিজামা করান আর ঔষধপত্র সব বাদ দিয়ে দিন!
বরং আমরা বলি আপনি প্রয়োজনে ঔষধ ও হিজামা একই সাথে করে যেতে পারেন। হিজামা থেকে উপকার পেতে শুরু করলে আস্তে আস্তে প্রয়োজনে ওষুধের প্রতি নির্ভরতা কমাতে পারবেন।
হিজামা এবং ড্রাগ ফার্মাকোলজির উপরে অসংখ্য রিসার্চ হয়েছে। রিসার্চ বলছে হিজামা করার কারণে কয়েকটি ফলাফল পরিলক্ষিত হয়-
- হিজামা যেভাবে কাজ করে তাতে Drug interaction এর কোন সুযোগ নেই।
-হিজামা কোন ঔষধেরই কার্যকারিতা কমিয়ে দেয় না।
-হিজামার মাধ্যমে প্লাজমা ক্লিয়ারেন্স হয়। রোগ সৃষ্টিকারী বিভিন্ন উপাদান শরীর থেকে বের করে ফেলা সম্ভব হয়। তাতে দেখা যায় হিজামার কারনে মূল Disease burden টা অনেকটাই কমে যায়।
আর সেকারনেই হিজামা করার পরে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ঔষধের ডোজের পরিমাণ কমানোটা সম্ভব হয়।
সেটা কীরকম?
আরেকটু ভেঙে বলি:
আগে হয়তো কোন নির্দিষ্ট ব্যথার রোগে ব্যথাটা ওষুধ ছাড়া কমতোই না, দেখা গেল হিজামা যোগ করার পর ব্যথা কমতে শুরু করল। আগে হয়তো দিনে ২ টা পেইন কিলার লাগতো বাধ্যতামূলক ভাবে, এখন লাগে দিনে ১ টা, অথবা ২ দিনে ১ টা বা মাসে একটা! এরপর হয়তো রোগী দেখলেন প্রতি ২ মাসে ১ বার হিজামা নিলে মাঝখানে আর পেইন কিলার লাগছেই না। এভাবে আমরা ড্রাগ ডোজ কমিয়ে, ড্রাগ উইথড্রয়ালে যাই।
তবে নির্দিষ্ট কয়েকটা রোগের ক্ষেত্রে যেকোন Disease Modifying ড্রাগ যদি রোগী পেয়ে থাকেন সেটা সাধারণত বন্ধ করার কোন প্ল্যান আমাদের থাকেনা। সেক্ষেত্রে সিম্পটম যথাসাধ্য নিয়ন্ত্রণে এনে যত কম থেরাপিউটিক ডোজে ড্রাগটি রাখা যায় সেটার ব্যাপারে খেয়াল রাখা হয়।
প্রশ্নের শেষ অংশ-
"কীভাবে বুঝব যে, হিজামা থেকে উপকার পাচ্ছি নাকি ওষুধে?"
ড্রাগ আর হিজামা একসাথে চললে যদি কনফিউজড হন উপকার পাচ্ছেন কীসে তাহলে মিলিয়ে দেখুন শুধু ওষুধ পাবার সময় আপনি কেমন ছিলেন, আর হিজামা যোগ করার পর কি কি পজিটিভ চেঞ্জ আপনি বুঝতে পারছেন। তাতেই আপনি নিজেই বুঝবেন এফেক্টটা আসলে কার।
তার মানে দাঁড়াচ্ছে, হিজামা শুধু নিজেই একটা চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবেই নয়, বরং তা প্রচলিত অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতির কাজকেও সহজ ও ফলপ্রসূ করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে সক্ষম।
হিজামার রক্ত টা আসলে আসে কোথা থেকে
" হিজামার রক্ত টা আসলে আসে কোথা থেকে ? হিজামা করতে যেয়ে শিরা বা ধমনী এসব আবার কাটা পড়বে নাতো ?"
হিজামার নাম অনেকেই নতুন শুনছেন।
এতে রক্ত বের করার একটা ব্যাপার আছে, সেটা শুনলেই সবার মাঝে কিছু জল্পনা-কল্পনা আপনা আপনিই শুরু হয়ে যায় !! ব্যাপারটা অনেকটা - 'রক্ত' আছে যেখানে 'ভয়' যেন সেখানের মত!
আমরা মনে করি যৌক্তিকভাবে এই ভয়টা দূর করা দরকার। নতুবা অহেতুক নানা 'শংকা' তৈরি কখনোই থেমে থাকবেনা।
আসুন একটু মিলিয়ে দেখি।
Skin আমাদের শরীরের সবচেয়ে বড় organ। এর নিচে জালের মত বিছানো রক্ত পরিবহন তন্ত্রটি থাকে চামড়ার দ্বিতীয় লেয়ারে। এগুলো আমাদের শরীরের সবচেয়ে সূক্ষ্ম রক্তনালী। বড় বড় শিরা বা ধমনীর থেকে এর গঠন একদম আলাদা। এগুলো এতটাই সূক্ষ্ম যে খালি চোখে দেখা মুশকিল!
এখন হিজামার স্ক্র্যাচ এর কথা যদি ধরা হয় তাহলে দেখবেন, এই স্ক্র্যাচও অনেক সূক্ষ্ম। এতটাই যে, এতে চামড়ার বড়জোর প্রথম লেয়ারে আঁচড়গুলো পড়ে (ছবিতে গোলাপি রং চিহ্নিত লেয়ারটা)। এর আরো গভীরে থাকা এইসব ক্যাপিলারিগুলো কাটা পড়ে না। আর এটাই হল হিজামার স্ট্যান্ডার্ড প্রসিডিউর।
যদি স্ট্যান্ডার্ড প্রসিডিউর ফলো করা হয় তাহলে একটু মিলালেই দেখবেন, হিজামা করা যখন শেষ হয় তখন প্রায় প্রতিটি স্ক্র্যাচ পয়েন্টে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে, যেটা আসলে প্লাজমা। আর এই যে প্লাজমা টা বের হচ্ছে, এটা নিশ্চিত করা কিন্তু হিজামার জন্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা ধাপ।
এই ধাপ শেষে এবার আপনি যতই সাকশন দেন না কেন প্রতিবার বড়জোর শুধু পানির মত প্লাজমাই বের হবে, লাল রক্ত আর আসবে না।
প্রশ্ন হল- আসেনা কেন?
আসেনা কারন হিজামাতে Dermal Capillaries কাটা পড়েনা। হিজামার সাকশন এর জন্যে এগুলোর ছিদ্র দিয়ে প্লাজমা আর নগন্য কিছু ভেঙে যাওয়া রক্তকণিকা বের হয়ে আসে। আর সেগুলো প্রথম লেয়ার এর skin surface এর ঠিক নিচে জমা হয়। যা স্ক্র্যাচ পয়েন্ট দিয়ে পুনরায় সাকশনে বেরিয়ে আসে (এটাই তাইয়্যেবাহ থিওরি)!
যদি হিজামাতে Deep Cut ( যেটা একদম নিষিদ্ধ) হয় তাহলে দেখবেন বেশিরভাগ পয়েন্টে সেই ট্রান্সপারেন্ট ফ্লুইড এর অস্তিত্ব আর পাওয়া যাবেনা সহজে!! প্রতি সাকশনে রক্তই আসতে থাকবে। যা একটা ভুল পন্থা।
যারা ভাবেন হিজামা করলে এইসব বড় বড় শিরা বা ধমনীর এর মত Structure কাটা পড়ে তাদের বলছি -শিরা বা ধমনী আমাদের চামড়া ভেদ করে আরো অনেক অনেক ভেতরে থাকে!
সঠিকভাবে হিজামা করা হলে Dermal Capillaries ই যেখানে কাটা পড়ে না সেখানে শিরা/ধমনী কাটা পড়বে সেটা কি যৌক্তিক হয় কোনভাবে??
তাইতো বলছি ভয়ের আসলে কিচ্ছু নেই!
PCOS